বিশ্বাসের গুরুত্ব
বাংলাদেশে একটা কথা খুব বেশি প্রচলিত আছে- নিজের বাপকেও বিশ্বাস করতে নেই। কিন্তু আসলে কি তাই? আজকে সেই বিষয়ে আমি আমার নিজস্ব মতামত পেশ করব।
আমি আমার এই ছোট্ট জীবনের সামান্য কিছু অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি যে, বিশ্বাস করলে মাঝে মাঝে ঠকতে হয়।
হয়তো আপনি কাউকে ভালোবেসে বিশ্বাস করলেন, সে আপনার সাথে প্রতারণা করল। এটা এখনকার যুগে অহরহ ঘটে।
এছাড়াও বন্ধুকে বিশ্বাস করে টাকা ধার দিলেন, সে হয়তো বিশ্বাস ভঙ্গ করল। আপনার প্রয়োজনের সময় সে আপনাকে চিনলই না। আমাদের সবারই কমবেশি এরকম অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে।
কাছের মানুষগুলো আমাদেরকে বেশি ঠকায়, বেশি কষ্ট দেয়। নিকটাত্মীয়রা বেশি বিপদে ফেলে। তাই বলে কি আমরা বিশ্বাস করা ছেড়ে দেবো?
আমার উত্তর: না!!!
আমার মত এরকম সবার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন না। ঘুরে দাঁড়ান, বিশ্বাস করতে শিখুন
আপনি হয়তো দশজনকে বিশ্বাস করে ৯ জন থেকেই কষ্ট ফিরে পাবেন। কিন্তু বাকি যে একজন আপনার বিশ্বাসের মর্যাদা দিবে, তার থেকে আপনি বিশ্বাসের যে মূল্যটা পাবেন- সেটা অবশিষ্ট ৯ জনের ফিরিয়ে দেয়া কষ্টের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান।
যে কাছের মানুষটি বিপদের দিনে আপনার পাশে দাঁড়াচ্ছে না, অন্তত বিপদে পড়ে হলেও তো আপনি চিনতে পারলেন- মানুষটি সত্যিকারের কাছের মানুষ ছিল না।
যে বন্ধুটি আপনার দুর্দিনে আপনার থেকে দূরে সরে গেল,পাশে দাঁড়ালো না। অন্তত কষ্ট পেলেও বিপদে পড়ার কারণে এটা তো জানলেন- সে আসলে আপনার বন্ধু ছিল না!
যাকে বিশ্বাস করে ভালোবেসেছিলেন, সে যখন প্রতারণা করলো.. হয়তো আপনার হৃদয় ভেঙে খানখান হলো..
কিন্তু এটা তো জানতে পারলেন- তার ভালোবাসাটা আসলে ছিল ছলনা এবং সারাজীবন সেই ছলনার সঙ্গে না কাটিয়ে, আগেভাগে সে বিদায় নিয়েছে- এর জন্য খুশি হওয়া উচিত!
ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে শেষ করব। গল্পটা হয়তো আমরা সবাই জানি। তবে আজকে একটু ভিন্নভাবে গল্পটা আমরা শুনব। এবং বিশ্বাসের গুরুত্বটা বুঝতে পারব।
দুই বন্ধু বন দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ ভাল্লুকের আক্রমণ। এক বন্ধু গাছে চড়তে জানত। সে অপর বন্ধুকে বিপদের মধ্যে ফেলে রেখে, তরতর করে গাছে উঠে নিজেকে বাঁচালো।
গাছে থেকে সে দেখতে পেল- দ্বিতীয় বন্ধু উপায়ন্ত না দেখে মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পরেছে। এবং দমবন্ধ করে পড়ে আছে। ভালুকটা এসে তার নাক কান শুকে দেখল। তারপর চলে গেল।
আসলে দ্বিতীয় বন্ধুটা একবার শুনেছিল, ভাল্লুক কোন মৃত প্রাণীর গোশত খায় না। তাই সে দম বন্ধ মৃতের মত পড়ে ছিল। ভালুকটা তাকে মৃত ভেবে চলে গেছে।
ভাল্লুক চলে যাওয়ার পরে প্রথম বন্ধু উপর থেকে নেমে এসে দ্বিতীয় বন্ধুকে প্রশ্ন করল, ভাল্লুক তোর কানে কানে কি বলেছে?
প্রথম বন্ধু উত্তর দিল: ভাল্লুকটা বলেছে, বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু।
আপনারা হয়তো ভাবছেন এই গল্প থেকে তো আমরা বিশ্বাসের কুফল দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু একটু অন্যভাবে ভেবে দেখুন। দ্বিতীয় বন্ধুটা গাছে চড়তে জানতে না, কিন্তু সে এটা শুনেছিল যে ভাল্লুক মৃত মানুষকে খায় না।
সেই তথ্যটা বিশ্বাস করেছিল। তাই সে মাটিতে মৃতদের মত দমবন্ধ করে পড়ে ছিল। এবং প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল।
যদি সে তথ্যটা বিশ্বাস না করত, যে কথাটা বলেছে তাকে বিশ্বাস না করত, তাহলে হয়তো প্রাণের বাঁচাতে ছোটাছুটি করত। আর ভাল্লুকের পেটে চলে যেতে হতো।
সে তার বন্ধুকে বিশ্বাস করে ঠকেছি কিন্তু আরেকজনের কথা বিশ্বাস করে অসীম সাহসে মাটি কামড়ে পড়ে ছিল। তাই বিশ্বাসের মূল্য সে পেয়েছে।
ঠিক একইভাবে- আপনি জীবনে কখনো হয়তো বিশ্বাস করে ঠকবেন। কিন্তু যা পাবেন তা আপনার জন্য অনেক বেশি প্রতিদান নিয়ে আসবে।
অতএব আসুন বিশ্বাস করতে শিখি এবং মানুষের বিশ্বাসের মূল্য রাখতে শিখি।
ভালো লিখেছেন। আমাদের বিশ্বাস করতেই হবে। যারা অবিশ্বাসী হওয়ার তারা হোক।
শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে চাই। আপনি কি ডিসকোর্ডে আছেন?
Yet not. Hope I will join soon.
হুম দ্রুত যুক্ত হয়ে যান।
Hi @tasri, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @simplifylife!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON