হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে | Mind wants to get lost

avatar
(Edited)

বাড়ি থেকে বাজার, বাজার থেকে বাড়ি। গত ৩ মাস হচ্ছে এই অবস্থা। মাঝেমাঝে একটু এলাকার বাহিরে যাওয়া হয় কিন্তু স্বাধীনভাবে না। স্বাধীনভাবে চাইলেও তা সম্ভব না। মহামারী এই ভাইরাস একদিকে যেমন জীবন জীবিকা নির্বাহ ব্যাহত করছে পাশাপাশি সবার মন মানসিকতা কেও দূরে ঠেলে দিচ্ছে। বাড়ি থেকে এখন বাহিরে ঘুরতে বের হইলে ফিরে আসতে মন চায়না। আজ স্কুল কলেজে পা রাখলে এক ভূতুরে পরিবেশ লাগে, কোনো কোলাহল নাই, কারো পায়েরও ছাপ নাই। গত সাড়ে ৩ মাস পূর্বেই যেখানে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক আর নাস্তা বিক্রেতাদের কোলাহলে মুখরিত ছিলো, আজ সেই যায়গাগুলো মানব শূন্য। এগুলো দেখার জন্য একদম প্রস্তুত ছিলামনা। শুধু স্কুল কলেজ নয়, অনেক অনেক জনসমাগমের মুখরিত স্থানগুলোতে আজ ভুতুড়ে পরিবেশ। আমি এটাকে ভূতুরেই বলবো। এ যেনো এক অদ্ভুৎ পৃথিবী হয়ে যাচ্ছে।


কথা ছিলো এমন সময় হারিয়ে যাওয়ার। আজ পৃথিবী সুস্থ থাকলে এমন সময় আমার রাজশাহী কিংবা বগুড়ায় থাকার কথা ছিলো, এইচ,এস,সি পরীক্ষা শেষ হয়ে আজ ভার্সিটি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি চলতো, ভার্সিটি কোচিং করতাম। এছাড়াও পাশাপাশি এমন সময় আমরা বন্ধুরা মিলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভ্রমণ করার কথা ছিলো। কথা ছিলো হারিয়ে যাবো দূর দূরান্তে, দেশ দেশান্তরে। চোখ যেদিকে যায়, মন যেদিকে টানে। কথাছিলো পাহাড়ে উঠে চিৎকার দিয়ে বলবো, জীবন তুই এতো সুন্দর কেনো। পৃথিবী তুই এতো সুন্দর কেনো। কিন্তু দূঃখজনক আজ যেমন স্কুল কলেজ খোলা নেই, এইচ,এস,সি পরীক্ষাও হচ্ছে না, সেই পাহাড় কিংবা সমুদ্রের ছোঁয়া পাচ্ছিনা এবং এলাকার বাহিরেও কোথাও যাওয়া হচ্ছেনা। এগুলো ভেবে ভেবে একটু যদি বাড়ির বাহিরে ঘুরতে বের হই, মন যেনো তাহলে ছেড়ে দেওয়া গরুর মতো হয়ে যায়, মন আর বাড়ির দিকে টানে না, চোখ আর ঘুমাতে চায়না। যাই হোক, ঘুরতে ভালোবাসে, আড্ডা দিতে ভালোবাসে, এমন মানুষকে আসলে ঘরবন্দী করে রাখাটা অদ্ভুৎ আর গায়েবি শক্তি ব্যতিত কখনোই সম্ভব ছিলো না।
বাঙ্গালী ভ্রমণ এবং আড্ডাপ্রিয় জাতি। আড্ডা হলো আমাদের জীবনের মূল আনন্দ। আজ সেই আড্ডা ঘুরাঘুরি যেনো এক চারদেয়ালের মাঝে বন্দি। করোনাভাইরাস যেভাবে আমাদের চিন্তা-ভাবনার জগত দখল করে ফেলেছে, এমনটা যে কোনো রোগের ক্ষেত্রেই খুব বিরল।

FB_IMG_1595050521636.jpg

IMG_20200715_100923.jpg

received_502947157093780.jpeg

অনেকদিনপর আসলে স্বাধীনভাবে ঘুরতে মুক্ত বাতাসের অক্সিজেন নিতে বের হয়েছিলাম দুই বন্ধু। পাশাপাশি দু-একটা কাজের জন্যও বের হওয়া। আসলে প্রকৃতি ঠিক এভাবে চলতে থাকলে আর মানুষদের ঘুরবন্দি, এলাকা বন্দি করে রাখলে সবার মন মানসিকতা ঠিক থাকবে না, হিংস্র কিংবা খিটখিটে হয়ে যাওয়ার কথা বলছে গবেষকের। আসলে এটাই ঠিক। বাসায় আর বারবার একই যায়গায় থাকতে থাকতে মন মানসিকতা দিনদিন ফাঁপরে ফুলে উঠতেছে।


মানুষ একা থাকতে পারে না বলেই একাকিত্ব অনেক সময় অসহনীয় হয়ে ওঠে। সেই একাকিত্ব ঘোঁচাতেই শুধু নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজন অন্তত ঘুরাঘুরি এবং ভ্রমণ করা। ভ্রমণ এবং আড্ডাই পারে একজন ছেলে মানুষের হৃদয়কে শীতল আর নমনীয় করে তুলতে। জানা নাই, এরকম সময় আরও কতদিন থাকবে। তবে, তারাতারি পৃথিবী সুস্থ হোক এবং পূর্বের মতো স্বাভাবিক এবং স্বাধীনভাবে সবার চলার গতি ফিরে আসুক এই প্রত্যাশা রইলো।
সৃষ্টিকর্তা সবাইকে ধৈর্য্য দিক এবং এই মহামারী থেকে সবাইকে হেফাজত করুক। সবশেষে এটাই বলবো, মন যেটা চায়, সব সময় তা হয়ে উঠে না, তার বাস্তব প্রমাণ এমন মহামারী। সুতরাং, মনকে বুঝ দিয়ে দিনশেষে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়াটাই আমাদের চাওয়া।

ধন্যবাদ.....



0
0
0.000
5 comments
avatar

wow

0
0
0.000
avatar

কি দেখে ওয়াও বললা মামা?? 😃

0
0
0.000
avatar

photo graphy +writing skill

0
0
0.000
avatar

Photography Korte Pari mama... magar writing a xpart na... amdr bdcommunity te jegulo writer ase tara osthir....! thanks for your comment mama....!

0
0
0.000