আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ
আচ্ছা ধরুন আপনার এলাকার কোন রিক্সা চালক হঠাৎ করেই রিক্সা চালানো বন্ধ করে দিলেন। সে এখন সারাদিন এলাকার চায়ের দোকানে বসে থাকে পায়ের উপর পা তুলে ফুকের উপর ফুক মারছে। দোকানদার সিগারেট আর চা দিতে দিতে দম হাঁড়িয়ে ফেলে। দুই দিন আগে যার আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল কিস্তির টাকা জোগাড়ের সে এখন আন্তর্জাতিক পলিটিক্স নিয়ে জ্ঞান দেয়। তার এখন বিশাল বড় অট্টালিকা। পাঁচ তলার একটা রাজকীয় বিল্ডিং। আপনার কি মনে হচ্ছে?
আচ্ছা ধরুন আপনার এলাকার নরসুন্দর যাকে আমরা নাপিত বলি। সে এখন আর দোকান খুলে না। তার কেচির কিচ কিচ আওয়াজ এখন আর আশে না কানে। তার সেলুনের পুরাতন হিন্দি গান বা আরজিত সিং এর গানের লিরিক্স শুনা যায় না। সে এখন YAMAHA R15 বাইকে করে হাঁকিয়ে বেরায় শহরের অলি গলি রাজপথ গুলোতে। মানিব্যাগে বেশ কয়েকটা এটিম কার্ড। যখন ইচ্ছা টাকা তুলছে আর খরচা করছে।
আপনার এলাকার মুদি দোকানদার সে এখন আর চাল ডাল আটা বিক্রি করে না। সে এখন ডলারের হিসেব নিকেশ করে। তার হাতে এখন আইফোন। কাঁধে থাকে রাইজেন ৫ এর লেপটপ। সাথে থাকে DSLR। বাড়ি এখন বহুতল বিশিষ্ট। নিচে গাড়ি রাখার জন্য অনেক বড় একটা গ্যারেজ।
হয়তো আপনার এখন মনে হবে ভূতের টাকা পেয়েছে এরা। নয়তো আলাদিনের জাদুর চেরাগ পেয়েছে। তা নাহলে হঠাৎ করে এমন কোটি কোটি টাকা কই থেকে এলো। আবার যদি আপনার এলাকার না হয়ে আমার এলাকার এমনটা ঘটে তাহলে হয়তো আপনারা বলবেন আমি পাগল হয়ে গেছি নয়তো বলবেন মেয়াদ উর্ত্তীন গাঞ্জা খেয়ে আবল তাবল বকছি।
উপরের যে তিন শ্রেনীর লোকের কথা বললাম এবং যা যা বললাম তা সবেই সত্যি এবং বাস্তব। এইসব অন্য কারো মুখে শোনা বা অন্য কোন শহরে নয়। এই সব গুলো ঘটনা আমার শহরের। আর এই সব ঘটনা শুধু একজন দুজন নয় এদের সংখ্যা অনেক। এরা এখন রাজকীয় জীবন যাপন করছে। এমন ও আছে সকালের নাস্তা খাওয়ার জন্য ফ্লাইটে করে ঢাকায় যাচ্ছে এবং পরের ফ্লাইটে চলে আসছে।
তাদের এই পরিবর্তনে রহস্য অথবা আলাদিনের জাদুর চেরাগ টা হচ্ছে থাইল্যান্ড। থাইল্যান্ডের থাই লোটারীর মাধ্যমে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করেছে এখনো করছে।
প্রবাসী বাংলাদেশি ও ভারতীয়রাও এই থাই লোটারীতে অংশগ্রহণ করে। আর তাদের এই লোটারীর কূপন নাম্বার গুলোই তাদের কাছে চুক্তি করে বিক্রি করে এক একজন কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। তারা কিভাবে নাম্বার গুলো বানাচ্ছে বা সংগ্রহ করছে সেটা নিয়ে হয়তো অন্য কোনদিন লেখা যাবে।
এখন মূল বিষয়টি হচ্ছে এই যে এতো শর্ট টাইমে কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে এটা উন্নয়ন বলা যাবে নাকি বিপর্যয় বলা যাবে? এই প্রশ্নটা আমার মাথা খাচ্ছে।
আমাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে যারা ধর্মের ধার ধারে না বা উপরী ধর্ম পালন করে এক কথায় যাদেরকে আমরা গরু খাওয়া মুসলমান বলে জানি তাদের কাছে তো এইসব কোন ব্যপার না। এখন ছোট থেকে বড় বুড়া থেকে বুড়ি সবাই ঐ থাইয়ের পিছনেই ছুটছে। সবাই কাজ কাম ফেলে রাখে এইসবের পিছনে ছুটছে। বিশেষ করে যুবকেরা পুরোপুরি আসক্ত হয়ে পরেছে হবেই না বা কেন। যে টাকা কখনো তাদের চৌদ্দ গুষ্টি স্বপ্নেও ভাবে নিই তারা আজ সেটা নিজের হাতের ময়লার মত ব্যবহার করছে।
আমি যে সেটা করতে পারবো না সেটা কিন্তু না। কিন্তু আমার রুচিতেই বাধে না আবার হারাম উপার্জনে বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ও নেই। হালাল উপার্জনে অল্প অর্থে নিজেকে খুশি রাখতে পারি এটাই অনেক।
Your content has been voted as a part of Encouragement program. Keep up the good work!
Use Ecency daily to boost your growth on platform!
Support Ecency
Vote for Proposal
Delegate HP and earn more
Hi @steemitwork, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON