খুন

avatar

আয়ান এখন প্রায় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে আর ভাবে দেখতে তো অবিকল শাহরুখ খানের মত দেখতে।
তার ভাবসাব খানা অদ্ভুত। তার ভালো না লাগার রোগে ধরেছে। প্রায় তাকে ভালো লাগে না। কেন ভালো লাগে না সেটার কোন কারণ নাই। ইদানিং প্রায় তার খুব খাইতে ইচ্ছা করে কিন্তু কি খাবে সেটাও সে বলতে পারে না।

আয়ান বন্ধুদের সাথে চৌরাস্তার মোড়ে আড্ডা দিচ্ছিল। হাতে ওয়ান টাইপ কাপে রং চা। প্রতি চুমুকে চুমুকে কথা বলছিল আর হাসাহাসি করছিল। ওমনি হঠাৎ করেই আয়ানের চোখের পাতা প্রথম আসমানে তুলে মেনডাকের চোখের মত বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল রিক্সা দিয়ে পার হয়ে যাওয়া সাদিয়ার দিকে।

এটা তো সেই সাদিয়া যে কিনা প্রতিদিন ফেসবুকে ঢং করে ছবি আপলোড দিবেই। মেসির পেনাল্টি কিক মিস হতে পারে কিন্তু আয়ানের সাদিয়াকে চিনতে না পারাটা অসম্ভব। কারণ সে যতগুলো তার ছবিতে লাভ রিয়েক্ট দিয়েছে তা বিফলে যেতে পারে না। কিন্তু সে তো থাকে ঢাকায় তাই একটু কনফিউশনে পরে গিয়ে দ্রুত ফেসবুকে তার প্রোফাইলে ঢুকে বন্ধুদের দেখিয়ে নিশ্চিত হলেন যে হুম এটাই সাদিয়া।

আয়ান রাতে বসায় ফিরেই ইনবক্সে নক দেয়। বিরক্ত করতে থাকে আয়ান। শেষে একপর্যায়ে সাদিয়াও শুরু করে দেয় চ্যাটিং। আয়নের ইনবক্সে লুতুপতু দেখে সাদিয়াও শুরু করে সুয়াতিগিরি আলাপ।

কয়েকদিনের মধ্যেই আয়ন তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে যায়। সাদিয়া ভূবন ভোলানো প্রেম দিয়ে আয়নকে প্রথম আসমানে তুলিয়ে দেয়। সাদিয়ার সবুজ বাত্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনতে আকে আয়ন। এভাবেই বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর হঠাৎ সাদিয়াকে মেসেজ দিতে পারে না। আয়নকে ব্লক দিয়েছে সাদিয়া। প্রথম আসমান থেকে ধপাশ করে পরে যায় আয়ন। এটা কি হল? কেন হল? সাদিয়া তাকে ব্লক দেওয়ার কারন টা কি? কাল রাতেই তো ভূবণ ভোলানো প্রেম বিনিময় হল। আজ সকালে আবার হঠাৎ করেই কি হল। এসব নানা প্রশ্নে নিছের চুল নিজেই ছেঁড়ার মত অবস্থা।

পৃথিবীর সব থেকে মোহনীয় আর আকর্ষনীয় কায়দায় কাউকে খুন করে ফেলতে ভায়োলেন্স বা রক্তপাতের প্রয়োজন নেই এটা সাদিয়া খুব ভালো করেই জানতো। যাকে খুন করতে হবে তাকে ভূবণ ভোলানো প্রেম দিয়ে পূর্ণ করুন। তারপর একদিন ছেড়ে চলে গেলেই কেল্লা ফতে।

সাদিয়ার মত সুন্দরী মেয়েদের ফেসবুকে সবুজ বাত্তি দেখলেই ছেলেদের হুশ থাকে না। এই বেহুঁশ হয়ে যাওয়া ছেলেদের খুনের অভিযোগ সাদিয়ার বহু রয়েছে। সুতরাং সেই রকম উদ্দেশ্যে ভূলেও কোন সুন্দরী মাইয়া দেখলেই ইনবক্স করবেন না। না হলে মেসেঞ্জারের এই সবুজ বাত্তি কবে যে লাল বাত্তিতে রূপান্তর নেবে টেরও পাবেন না। খুন হয়ে যাবেন রক্তপাত হবে না। খুনের জন্য আসামীকে কাঠগড়াতেও দাঁড় করাতে পারবেন না।

আয়ান আজও আনব্লক হওয়ার অপেক্ষায় আছে। নিকোটিনের ধোঁয়া আকাশে ফুকিয়ে আজও সেই প্রশ্নের উত্তর গুলো খুঁজছে।

images (7).jpeg
Source



0
0
0.000
0 comments