জীবন সংগ্রাম

avatar

জীবনের এই বৈচিত্রে টিকে থাকার সংগ্রামে সব আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। নিজেকেই এক পরাজিত সৈনিক হিসেবে উপস্থাপন করতে হয়তো আর বেশি সময় লাগবে না। বুঝতে পারছি প্রবল ক্ষয় শুরু হয়েছে নিজের মধ্যেই। নিজেকে উত্তাল সমুদ্রের মাঝখানে বৈঠা ছাড়া এক ডিঙ্গি নৌকার নাবিক মনে হচ্ছে। সাহারা মরুভূভির মাঝখানে নিজেকে আবিষ্কার করে ফেলেছি কুল কিনারা হারা এক পথিক। মাঝে মধ্যে মনে হয় দাড়িয়ে আছি আদিগন্ত বিস্তৃত এক সি বিচে। শক্তি নিঃশেষ হয়ে কখন আধুলিতে পরিণত হয়েছি; বুঝতে পারিনি। এভাবে জিন্দালাশ হয়ে বেঁচে থাকা; ভালো লাগে না মোটেও। আমার মতোই আমার আশেপাশে অনেক জিন্দালাশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। বারেবারে পিছিয়ে পরেছি। ছেড়ে দিয়েছিলাম হাল, আবার ফিরে এসেছিলাম। চ্যলেঞ্জগুলো মুখোমুখি হয়ে ছিলাম, জিতে ছিলাম সব সময়; বেশ শক্তপোক্ত। কিন্তু এভাবে আর কত?

এভাবে আর কত? এ যাত্রা কেন জানি দমে যাচ্চি, লড়াইয়ের ইচ্ছা নিস্তব্ধ হয়ে আছে। থেমে যাচ্ছে যৌবনের যুদ্ধ জয়ের স্পৃহা। কোন মোটিভেশনেই কাজ করছে না। নিজেকে ঠেলেও, এক দু'পা এগিয়ে নিতে পারছি না।

কেবলই মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছি না, তন্দ্রার মত ঝিমাচ্ছি। দিন দিন অবনতি হচ্ছে, তলিয়ে যাচ্ছি গভীতে। সুগভীর অন্ধকারে স্বাদহীন, বর্ণ গন্ধহীন জলরাশিতে তলিয়ে যাচ্ছি। কে যেন আমাকে সমুদ্র, আবার কখনো সমুদ্রের মত বিশাল বলে ডাকতো মাঝে মাঝে, সে কি জানে আমার বর্তমান অবস্থা। আমি সমুদ্র নয় সমুদ্রের অতল গহব্বরে হারিয়ে যাচ্ছি। মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে আরেকটু অতলে।

সময়ের পরিক্রমায় নাকি হারানো জিনিসগুলো বিভিন্ন পন্থায় বিভিন্ন কায়দায় ফিরে আসে। শুধু নাকি অপেক্ষা প্রহর গুনতে হয়। কিন্তু অপেক্ষা প্রহর তো অনেক কষ্টকর। অপেক্ষা প্রহর গুনতে গুনতে আজকের এই অবস্থানে। মাথায় ঘুরতেছিল এতোদিন যখন হারি নিই এখন হারার সময় না। ঘুরে যখন দাড়াতে পারি নিই এখন চোখ খুলে দাঁড়ানোটা জরুরী। সময় আসবে এই ভেবেই। এই তো দুই মাস আখেও এমনটা বোধ করছিলাম।

ক্লান্তি সব সময় খারাপ না। আসলেই খারাপ না। অনেক সময় শক্তিও জোগায়। দুই মাস আগেও চির চেনা লোক গুলোও যখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। দেখেও না দেখার ভান করছিল। কেউ কেউ তো ঘুরেও তাকাচ্ছিল না। আমি আপ্রাণ চেয়েও লড়তে পারছিলাম।না। প্রাণের প্রাচুর্য ফিরিয়ে আনতে পারছিলাম না। তলোয়ার কলম অথবা ভালোবাসা কোনটারেই ওজন সহ্য করার মত চওড়া কাঁধ ছিল না। পরাজিত সাম্রাজ্যের এক পরাজিত রাজা হয়ে গিয়েছিলাম। ঠিক তখনেই মহাণ আল্লাহর উপরে ভরশা করেছিলাম। সৃষ্টিকর্তা তার সৃষ্টির প্রতিটা জীবের জন্যই রহমত বর্ষণ করে যদি ধৈর্যের সাথে অসময়ের মোকাবিলা করে।

যে কোন অপশক্তিকে শততা ও ধৈর্য্যের সাথে মোকাবিলা করা যায় তাহলে এর ফল সব সময় মিষ্টি হবেই। মহান আল্লাহ্ আমাকে ধৈর্য্য ও শততার সাথে কাজ করার মত শক্তি দিয়েছে।

20201122_235055.jpg



0
0
0.000
1 comments