সর্বত্রে ধর্ষণ

avatar

-বাবুলাল বউ কেন কান্দিয়াছে রে ?
-দেশের বাড়ির কথা মনে পরিয়াছে, তাই কান্দিতেছে।
-হুম হুম, এক বার লাগিয়াছো আরেকবার লাগাইতে চাহিতেছো। আর কোও দেশের বাড়ির কথা মনে পরিয়াছে?

নতুন বিয়ে করেছে বাবুলাল। নতুন বিয়ে বুঝেনেই তো জোশে হুস হাড়ানো আমাদের পুরাতন অভ্যাস। বাপ দাদাদের কাছ থেকে জন্মসূত্রে কিছু পাই আর না পাই এই জোসটা পেয়ে থাকি। তো বাবুলাল বউয়ের সাথে এক রাতেই দুবার তার ইয়ে মানে, ইয়ে শেরে ফেলেছে। তৃতীয় বার বউয়ের উপর জোর করেই অস্ত্র চালাতে গেলে বউ কেঁদে ফেলে।

এতেই পাশের রুম থেকে বাবুলালের দাদা আওয়াজ দেয় বাবুলাল, বউ কেন কান্দিয়াছে? বাবু লাল জবাবে বলে, দেশের বাড়ির কথা মনে পরেছে তাই বউ কাঁদে।

যাক বাবুলালের প্রাইভেসী আর নষ্ট না করি। তবে এই গল্পটি বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্ষণ। আমাদের দেশে দিনকে দিন ধর্ষনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

পেপার প্রত্রিকা খুললেই ধর্ষণ আর ধর্ষণ। জাতী হিসেবে আমরা কোন পর্যায়ে নেমে গেছি। মুক্তিযুদ্ধের সময় নাকি পাকিস্থানের হানাদার বাহিনীরা আমাদের মা বোনদের ধর্ষণ করেছিল কিন্তু এখন। এখন তো মনে হচ্ছে নিজেরাই নিজেদের ধর্ষন করেছি আমরা।

পত্রিকা খুললেই বাবা কর্তৃক মেয়ে ধর্ষণ, প্রেমিক কতৃক প্রেমিকা ধর্ষন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, মালিক কর্তৃক গৃহকর্মী ধর্ষণ, অফিসের বস কর্তৃক কর্মচারী ধর্ষণ এমন উদাহরণ শত শত।

এছাড়া কেউ করছে দেশকে ধর্ষন কেউ করছে দেশের আইনকে ধর্ষন কেউ বা করছে স্ত্রীকে ধর্ষন কেউ বা করছে পথে ঘাটে মাঠে একা মেয়েকে পেয়ে ধর্ষণ।

তবে দেশ ধর্ষক থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ হতে আইন ব্যবস্থা হতে মেয়ে ধর্ষক সব গুলোই চক্রাকারে ঘুরছে। সব ধর্ষকের একে অপরের সাথে সম্পর্কিত একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছে।

রুসুনের পুন্দি(পাছা) যেমন এক জায়গায় ঠিক সব ধর্ষকের পুন্দিও এক জায়গায়।

আইন ও বিচার বিভাগ চলছে রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশনায়। হচ্ছে পছন্দমত বিচার। শত শত হাজার হাজার উদাহরণ রয়েছে আমাদের সামনে। একটি উদাহরণ দেই, অস্ত্র মামলায় সম্রাটের চার্জশিট - ৬ নভেম্বর ২০১৯, বিচার এখনো শুরু হয় নিই।
অন্যদিকে, শাহেদের চার্জশিট ১৯ আগস্ট ২০২০, বিচার শেষ, জাবতজীবন কারাদন্ড। তবে এইসব সম্রাট বলেন আর শাহেদ বলেন এরা কাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে রাখব বোয়াল হয়েছে, তাদের অবস্থাটা কি, তাদের পিছনে কারা কারা রয়েছে তাও বুঝতে আর বাকী নেই?

শুধ মাঝে মধ্যে শাহেদদের বলির বাখরা হতে হয়। তাদের দিয়ে নিজেকে কিছুটা পাক পবিত্র করার চেষ্টা চালানো যায় পুরাতন ইস্যু ঢেকে দেওয়া যায়।

এবার আরেকটি উদাহরণ দেখা যাক সম্রাট আর শাহেদরা কিভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় পায়। কয়েকদিন ধরেই ফেসবুক নিউজ ফিড ভাসছে একটি ছবি। ছবিতে দুজন ব্যক্তির অন্দর মহলের ছবি দেখা যায়। সেখানে একজন ছিল বাংলাদেশের আইনের সর্বোচ্চ রক্ষক বলা যায় তিনি হলেন রেপিড একশন ব্যাটেলিয়ান (RAB) এর মতই পরিচালক বেনজির আহমেদ। আরেক জন হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী যাবতজীবন কারাদণ্ডের আসামি যোসেফ। যাকে কিনা রাষ্ট্রপতি সাজা মওকুফ করে মুক্তি দিয়েছেন। এখন কি ভাবছেন রক্ষক যখন ভক্ষক।

যোসেফ সম্পর্কে এখন যদি বলতে চাই সে অনেক কথা। সকলেই হয়তো তার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানেন। তাই সেই বিষয় নিয়ে আর আলোচনা করতে চাচ্ছি না।

কোন কিছুর প্রতিবাদ করলে সময়ে অসময়ে বিভিন্ন ট্যাগ তো রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে চলছে মুক্তিযুদ্ধ ধর্ষণ। আমাদের অবস্থা হয়ে গেছে এখন বাবু লালের বউয়ের মত, আর রাষ্ট্রের অবস্থা হয়েছে বাবু লালের মত। জোর জবর দোস্তি ধর্ষণ সহ্য করতে না পেরে আমরা কাঁদছি, আর কোথাও থেকে আওয়াজ আসলে বাবুলালের মত উত্তর আসছে আমরা পেয়ারে পাকিস্থান যেতে চাচ্ছি।

171553_bangladesh_pratidin_rape.jpg

SOURCE



0
0
0.000
9 comments
avatar

দুপুরে খেতে বসলে যাও একটু টিভি টায় খবর দেখবো খালি এগুলাই চলে। খুন,লুট,দুর্নীতি,ধর্ষণ এগুলাই। মানে ইতিবাচক খবর গুলো একদম ই কম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলেন আর পএিকা সব যায়গায় এক ই চলে। আজ একটা চলছে সবাই হুমরি খেয়ে পরছে কাল নতুন একটা আসবে তারপর আগের টার আর পাওা নাই।
ভাই পুরাই ফ্রাস্ট্রেটেড এগুলা দেখতে দেখতে।
এজন্যই একজন বলেছিল" আই ফাক ইউ বাংলাদেশ, আই এম ইটালিয়ান পাসপোর্টধারী" তারা অন্য দেশে কামলা খাটলেও শান্তি তে আছে।আমাদের মতো এত দিক দিয়ে ধর্ষিত হচ্ছে নাহ।

যাইহোক অনেক দিন পর ভাই এর লেখা পেলাম।

0
0
0.000
avatar

একটু সংশোধন করে দেই ইতালিয়ান প্রবাসী বলেছিল আই ফাঁক ইউর বাংলাদেশী সিস্টেম। সেখানে সে আমাদের সিটেমকে কে বলেছে যা সত্যিই বলেছে খারাপ কিছু বলে নাই।

দেশটা রসাতলে গেছে। চোর বাটপার দুর্নীতিবাজ দিয়ে ভরে গেছে। এর পরিত্রাণ যে কবে হবে?

আসলেই ঠিকেই বলেছেন, এইসব আর নিতে পারছি না। আর কত? আমি তো টিভি দেখাই ছেড়ে দিয়েছি।

0
0
0.000
avatar

হ্যা, এরকম ই বলেছিল,সরি ফর দ্যা লিটল মিসটেইক।

পরিএাণ দেখছি নাহ। সবাই ই ভোগ দখলে ব্যাস্ত।
নিজেদের অবস্থান থেকেও যে সৎ পথে চলবো তারও অবকাশ রাখতেছে নাহ। আশাবাদী, পরিবর্তন আসবে।

0
0
0.000
avatar

জি ঠিকেই বলেছেন, নিজের অবস্থান থেকেও যে সৎ পথেসচলবো তারও অবকাশ নাই। তবে সৎ পথে চলতে সব সময় বাধা ছিল। আমাদের তবুও নিজেকে সৎ পথে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।

ইনশাআল্লাহ্ একদিন আলো আসবেই।

0
0
0.000
avatar

আইন ও বিচার বিভাগ চলছে রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশনায়। হচ্ছে পছন্দমত বিচার। শত শত হাজার হাজার উদাহরণ রয়েছে আমাদের সামনে।

এটাই হচ্ছে প্রকৃত কারণ। যতদিন না আমরা এই সংস্কৃতি হতে বের হতে পারছি, ততদিন দেশে কোন সুবিচার আশা করা মহা পাপ।

0
0
0.000
avatar

রাজনৈতিক অঙ্গনে নোংরা সংস্কৃতি চালু হয়ে গেছে। এইখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।

একটা পরিবর্তন দরকার। আর এই পরিবর্তনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

0
0
0.000
avatar

কোন বিরুদ্ধমতকেই তো সরকার টলারেট করছে না। যে দুই একজন সাহস করে এগিয়ে আসছে পুলিশ এবং আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে তাদের দফারফা করে দেয়া হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত ধারনা, আল্লাহ যতদিন না তার বিশেষ এই বান্দাকে উঠিয়ে না নিচ্ছেন, ততদিন কোন আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। আল্লাহ নিশ্চয়ই মজলুমদের সাহায্য করবেন।

0
0
0.000
avatar

কোন অবৈধ শাসক তার বিরুদ্ধে কোন মতকেই সহ্য করবে না। আর এটাই তাদের বৈশিষ্ট্য। তারা যতটুকু পারবে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করবে। গুম খুন হামলা মামলা তাদের এক মাত্র পথ। তবে যারাই এই পথে এগিয়েছে তাদের আর ফেরার পথ খোলা থাকে নিই। তারা দিনের পর দিন চোরাবালিতে তলিয়ে যায়।

0
0
0.000