গল্পের ঝুড়ি: পর্ব-১

avatar


Canva.com


রাতে মাঝে মাঝে ঘুম না এলে, মাকে জ্বালাতন করার স্বভাবটাও বেশ পুরোনো। এই কথা, সেই কথা জানতে চাওয়া আমার মনের কাছে, মা ক্লান্ত হয়ে যায়।ফলাফল মায়ের বকুনি খেয়ে শুয়ে পড়া এবং অবশেষে ঘুমের রাজ্যে কড়া নাড়া ।
আম্মু, একটা গল্প বল!
ঘুমাতো
মা প্লিজ!মা তুমি কখনো প্রেমপত্র লিখেছো?
এই মেয়ে!
অন্য কিছু বল তাইলে 😒 ভুতের গল্প বলো!
ভূত বলে কিছু নাই
মা!
আচ্ছা ভূত বলে তো কিছু নেই কিন্তু পরীর গল্পটা বলতে পারি!
নিজের চোখে পরী দেখছো?
না, তবে বেশি প্রশ্ন করবি না!
আচ্ছা মা
সময় কাল তখন ১৯৮৮ বা ১৯৮৯। ক্লাস অষ্টম বা নবম শ্রেণিতে পড়ি আমি।দাদা (মানে আমার মামা) তখন সবে দোকান দিয়েছে আমাদের গ্রামের বাজারে।নতুন দোকান! গঞ্জে যেয়ে মালামাল আনে।মাঝে মাঝে শহরেও যায়। তোর খালামনিদের বিয়ে হয়ে গেছে।তোর দুই খালু আবার সম্পর্কে হলো চাচাতো ভাই! তাই খালামনিদের বাড়ি ও কাছাকাছি।

ঘটনার শুরু এমন যে, তোর মেজ খালুর কোন এক ভাই, একটি বিদেশি টাকার নোট রাস্তায় দেখতে পায়।তখন সেখানে কাউকে দেখতে না পেয়ে, নোটটি বাড়ি নিয়ে আসে।সেটা দেখা পরে যেটা বুঝা যায় যে, সেটা ১০০০ দিনার।এবং খবর নিয়ে জানতে পারে, ওই সময়ে ১ দিনার, ৪৫ টাকার সমান! তাহলে এটা দাঁড়ায় যে, ঐ একটি নোট সমান বাংলাদেশি টাকায় ৪৫ হাজার টাকা।যেটা একটা বিরাট পরিমান। তবে সবাই নাকি কিছুদিন অপেক্ষা করেছে যে,এই নোট এর কেউ খোঁজ করে কিনা? কিন্তু সেভাবে কেউ না আসায়, সবাই সিদ্ধান্ত নেয় যে এটা টাকায় পরিবর্তন করে, সবাই মিলে কোন ব্যবসায় খরচ করবে।


তো যেহেতু তোর মামা তখন ব্যবসার কাজে প্রায় ঢাকায় যাতায়াত করে। তাই তোর বড় খালু, আমাদের এক মামাতো ভাই আর তোর মামাকে নিয়ে ঢাকায় যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।আচমকা এত গুলো টাকা পাওয়ার পর থেকে ব্যাপার টা নিয়ে সবার মধ্যেই একটা আনন্দ কাজ করতে থাকে।তোর মামারা তো বলেই দিয়েছিলো,যে নোটটি, বাংলাদেশি টাকায় ভাঙানোর পর, আগে বড় একটা রেস্তোরাঁয় খাবার খাবে।তারপর সিনেমা দেখবে। বাকি টাকা দিয়ে দিবে! তারা সবাই ই রাজি! শুভে লাভে কাজ হলেই হলো!


ঢাকা যাবার প্রস্তুতি শুরু হলো। ভাইজান ( আমার বড় খালু)নোট টি নিয়ে আমাদের বাড়িতে এলেন। তাই আমার ও সুযোগ মিললো নোট টি একটু নেড়েচেড়ে দেখার। কাগজের, হালকা ময়লা, আর মাটিতে থাকায় কিছুটা নরম!তাই ভাইজান আমাকে বললো যে, আয়রন করে দিতে।তখন বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকলেও, আমাদের কয়লার আয়রন ছিলো।আয়রন করার পর নোটটি প্রায় নতুনের মত হয়ে গেল।তারপর দাদা মাকে নোটটি দিয়ে বললেন যে আলমারি তে ভালোভাবে রাখতে,কারন আশেপাশে কিছুটা জানাজানি হয়েছে।তাই খানিকটা সচেতনতা!মা সুন্দরভাবে একটি সাদা খামে নোটটি রেখে, তাদের ব্যাগের প্যান্ট এর ভাজে খামটি রেখে, তালা লাগিয়ে, চাবিসহ ব্যাগ আমার এক মামাতো ভাইয়ের হাতে দেয়।এবং ঐদিন রাতেই তারা তিনজন নাইটকোচের গাড়ীতে উঠে পরে, ঢাকা যাবার উদ্দেশ্যে। তখন সূর্যমুখী নামের বাসগুলি ছিলো তিন সিটের।মাঝে মামাতো ভাইকে রেখে দাদা আর ভাইজান দুইপাশে বসে।যেন ব্যাগ কেউ টান দিতে না পারে।জোরে হর্ণ বাজিয়ে, গাড়ি চলছে ঢাকার উদ্দেশ্যে..............................!



0
0
0.000
1 comments
avatar

Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :

You distributed more than 10 upvotes.
Your next target is to reach 50 upvotes.

You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word STOP

0
0
0.000