গল্পের ঝুড়ি: পর্ব-2

avatar
(Edited)

source


চলন্ত গাড়িতে সারাদিনের দোকানের কাজকর্ম এর খাটুনিতে তোর মামা আর খালু গভীর ঘুমে আছন্ন হয়ে পড়ে! জেগে থাকে শুধু মিয়া ভাই! রাতের শেষ প্রহরে কয়েকবার ঘুম ভেঙে গেলেও, বেশ ভালো ঘুমই হয়েছিলো সবার!পরেরদিন সকালে, ঢাকায় নেমেই হোটেলে উঠলেন সবাই।নিজেদের ক্লান্তিকে নিরাময় করার জন্য, একে একে সবাই গোসল করে ফেললেন।বিপত্তি হলো, যখন দাদা খেয়াল করলেন,প্যান্ট এর ভাজে আসলে খামটি নেই!ভেবেছিলেন মা হয়তো অন্য কোথাও রেখেছেন! কিন্তু না! পুরো ব্যাগের কোথাও নেই নোটটি!দাদা তখন প্রচন্ডভাবে ঘামতে লাগলো। বুঝেই উঠতে পারছে না, কি হলো।

ওই দিকে ভাইজান ভাবলেন যে, দাদা আর মিয়া ভাই মিলে নোটটি চুরি করেছে।সে বেশ বিরক্ত হয়ে বলেছিল, তোরা এভাবে চুরি করতে পারলি! কারণ নোট টা তার চাচাতো ভাইয়ের। এই বলে সে হোটেল থেকে বের হয়ে, চলে গেলেন ব্যাংক এর সামনে, আড়ালে অপেক্ষা করতে লাগলেন!যদি তারা চুরি করে থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যাংকে আসবে!

দাদা তার বোনদের সংসার আর মাকে কি জবাব দিবে এই ভয়ে, মিয়া ভাইকে বললো, আপনে বাড়ি যান,আমি যাবো না!কারন পরোক্ষভাবে তারাই এখন চোর!কিন্তু মিয়া ভাই,দাদা জোর করে বাড়ি নিয়ে আসে আর ঐদিকে ভাইজান সারাদিন তাদের অপেক্ষা করে, দোকানের মালামাল কিনে বাড়ি আসে।


মা সকালে নামায পরে, ঘাটলায় হাত মুখ ধুচ্ছিল, এমন সময় দেখলো দাদারা আসছেন!দাদা মুখখানি দেখেই মার বুকটা ধক করে উঠলো!দাদা চুপচাপ ঘরে চলে গেল আর মিয়া ভাই মাকে বললো যে, টাকাটা অচল,তাই এটা টাকায় পরিবর্তন সম্ভব না।এই দিকে দাদা মনে মনে সন্দেহ করতে লাগলো মিয়া ভাইকে কারন সে বাড়ি ফিরেই সরাসরি তার শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে চলে গেছেন।একরাতে খাবার খেতে খেতে দাদা মাকে বললো, "মা,তোমার ভাইয়ের ছেলে যদি ঐ দিনার চুরি করে, আমি কিন্তু ছেড়ে দিব না!"।মা তো অবাক! হঠাৎ করে এমন কথা শুনার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না।পরে মা যেটা বললো, তা শুনে দাদা ই বরং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ল।বলেন যে,আমি আমার বংশ ও চিনি, তোদের টাও চিনি!চুরি তুই করছিস কিনা বল?চুরি করার মানুষ আমরা না!ওই রাতে দাদা খাবার ঐভাবে রেখেই চলে যায়।শুধু এই টুকুই বলে আমি প্রমাণ করেই ছাড়বো!


এইদিকে তোর বড় খালু মানে ভাইজান যে কান্ড করল! তা হলো,ঐ নোট টা গুনানো শুরু করল।সে সময় গণক ছিল। গণক কিরকম,কিছু হারিয়ে গেলে বা কোন কিছুর ব্যাপারে অনুসন্ধান করলে মানুষজন গণকের কাছে যেয়ে গুনাতো,যে সেটা কোথায় আছে।এবং তা প্রবলভাবে বিশ্বাস করতো।

এভাবে বিভিন্নরকম জায়গায়, খোঁজ নিতে থাকে। এর মধ্যে একজন আবার নাকি বলে৷, "দিনার দিয়ে ট্রলার গড়ে" এবং দাদা তখন সত্যি যৌথভাবে ট্রলারে ব্যবসা শুরু করে।হাহাহা..... কি রকম একটা টানাপোড়েন অবস্থা.......!এমন কিছু কিছু সময় জীবনে আসে,যেখানে চুরি না করে ও, এ দায় নিতে হয়। কিছুটা বিনা দোষে, অপরাধীর মত।দাদা অপরাধীর মত বাড়িতে এসে কোন মতে খেয়ে চলে যেত।এমনকি মাঝে মাঝে ফিরতো না।বাড়িতে প্রত্যেকটা দিন যে কিভাবে কাটাতো।এর ই মাঝে কেটে গেল তিন তিনটি মাস.....!



0
0
0.000
0 comments