ক্ষুধার্ত আনাড়ি রাঁধুনি

avatar

বসে ল্যাপটপে চাকরির জন্য CV তৈরি করছিলাম। গভীর রাত হয়েছে। রাতে যা খেয়েছি সব হজম। পেটে প্রচণ্ড ক্ষুধা। পরিবারের সবাই দাওয়াতে গেছে। ফুপাতো বোনের বিয়ে। বাড়ি পাহারার দায়িত্ব আমার। সাথে আছে ভাগনা। রান্না করা যে খাবার ছিল দুজনে সব শেষ করেছি। অন্য খাবার খুঁজছি কিন্তু পেলাম না। চোখে পড়লো নুডলস'র প্যাকেট। সিদ্ধান্ত নিলাম নুডলস রান্না করবো। যেই ভাবা, সেই কাজ। শুরু করলাম রান্নার প্রসেসিং।

IMG_20201025_010840_1.jpg

প্রথমত, রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো নিলাম। তেল, পেয়াজ, কাঁচা মরিচ, ডিম, লবন, মসলা ইত্যাদি৷ ইলেকট্রিক চুলায় পানি উত্তপ্ত করলাম। উত্তপ্ত পানিতে নুডলস দিলাম সিদ্ধ করতে। নুডলস সিদ্ধ হতে হতে পেয়াজ-মরিচ কাটলাম। নিজেকে রাঁধুনি মনে হচ্ছিলো। বাসায় আমি আর ভাগনা ছাড়া কেউ ছিল না তাই নির্দিধায় আমিও রান্না করেই যাচ্ছিলাম।

IMG_20201025_011929.jpg

IMG_20201025_012036.jpg

IMG_20201025_012212.jpg

IMG_20201025_012330.jpg

তারপর ডিম ফ্রাই করলাম। সাথে দিলাম পেয়াজ-মরিচ। রান্নার সময় মাথায় বারবার একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছিলো, রান্না করতে পারবো তো! কিন্তু সব কথা উপেক্ষা করে নুডলস রান্নায় মনোযোগ দিলাম। অতীত অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করে সব ধরনের মসলা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে অবশেষে তৈরি করে ফেললাম নুডলস। নুডলস এর চেহারা দেখে মনে হলো গতবারের চেয়ে এবার বেটার রান্না করতে পেরেছি। অন্তত হালুয়া বানিয়ে দেইনি।

IMG_20201025_012435.jpg

এটা আমার দ্বিতীয় বার নুডলস রান্না করা। এর আগে একবার নুডলস রান্না করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু নুডলস রান্না করতে গিয়ে হালুয়া বানিয়ে ফেলি। বাড়িতে সবাই হালুয়া নুডলস এর কথা বলে আমাকে কতবার হাসির পাত্রে পরিণত করেছে তার হিসেব নাই। তাই লজ্জায় আর নুডলস রান্না করতে যাইনা। যদি খেতে ইচ্ছে করে তাহলে আপুকে বলি রান্না করে দিতে।

নুডলস'র স্বাদ কেমন হয়েছে? উত্তরে বলবো, নিজের রান্নাকে কেউ কখনো খারাপ বলে না। লবন কম হলেও খায়। আমিও বলতে চাই না। তবে হলফ করে বলতে পারি, এই নুডলস আমার কাছে বেশ সুস্বাদু লেগেছে। পেটে ছিল প্রচণ্ড ক্ষুধা। ভালো রান্না না হলেও কিন্তু পেট নামক ব্লাক হোলে পৌঁছে যেতো। যেহেতু স্বাদ ছিল তাই দুই মিনিটও লাগেনি নুডলস শেষ করতে।

IMG_20201025_012542.jpg

IMG_20201025_012615.jpg

IMG_20201025_012634.jpg

IMG_20201025_011835.jpg

IMG_20201025_011126.jpg

IMG_20201025_012519.jpg

এই রাত আমাকে মেস জীবনের কথা মনে করিয়ে দিলো। আমি যে মেসে ছিলাম সেই মেসের বুয়া (খালা) প্রায় অসুস্থ থাকতেন। ফলে, আমাদেরকে রান্না করতে হতো। সবাই মিলে রান্না শুরু করতাম। সাধারণত বাড়িতে রান্না করা হয় না। কারণ, বাড়িতে মা-বোনদের রান্নার মজা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে চাইনা।

তবে মাঝেমাঝে এভাবে পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতিতে রান্না করার প্রয়োজন। এতে রান্নার হাত ভালো হয়। নতুন কিছু শেখা হয়। সর্বোপরি, বউ প্রশংসা করবে।



0
0
0.000
0 comments