সূর্যের অবাধ স্নিগ্ধতার প্রলোভন ! ( শেষ পর্ব )

avatar

সূর্যের আলো বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে যেমন তীক্ষ্ণতা বৃদ্ধি পায় , তেমনই এক সময় তা অস্ত গিয়ে আঁধার নামিয়ে ফেলে !
প্রণয়ীর জীবনেও অনেকটা এমনই সূর্য এসে আলো দিয়ে তীক্ষ্ণতা দিয়ে সকল কিছু পরিপূর্ণ করে দিয়ে আবার আঁধার নামিয়ে দিয়ে গেলো !

InShot_20210219_004425435.jpg

প্রণয়ীর মনে এখন অস্থিরতা কাজ করে , সে আর স্নিগ্ধতা পায় না , চাইলেই সে মানুষটাকে গিয়ে বলতে পারে না তার এই হাহাকার ! এর চেয়ে বেশি বিড়ম্বনা হয়তো আর কিছুতেই নেই !

প্রণয়ীর জীবনে সূর্যের অর্ধ আগমনের শুরুটা অনেকটা গ্রীষ্মের মাঝে দক্ষিণ বাতাসের মতন এসেছিলো , সূর্যের কথা মাঝে আলাদা একটা মায়া খুঁজে পেয়েছিলো প্রণয়ী !

সূর্য : প্রথম বর্ষ ?
প্রণয়ী : জ্বী ভাই
সূর্য : কোন ডিপার্টমেন্ট ?
প্রণয়ী : ম্যানেজমেন্ট ..
সূর্য : ডিপার্টমেন্ট অফ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বলা যায় না ?
প্রণয়ী : ওই একই তো হলো ভাই !
সূর্য : আমি কী হই তোর জানিস ?
প্রণয়ী : না ভাই !
সূর্য : আমি তোর ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র !
প্রণয়ী : আস্সালামুয়ালাইকুম ভাই , আসলে আমি ..
সূর্য : ওয়ালাইকুমসালাম , না চিনে তো বেয়াদবি করে ফেললি !
প্রণয়ী : আসলে ভাই ...
সূর্য : এই পিচ্চি ! ভয় পাস কেন ? আমি তো যাই নাই তোদের সাথে দেখা করতে , চিনবি কেমনে ?!
প্রণয়ী : ভাই ...
সূর্য : চা তুই খাওয়াবি নাকি আমি ?
প্রণয়ী : জ্বী ভাই ?! আমিই খাওয়াবো !
সূর্য : হুঁশ ! টুকিটাকিতে আয় আমার সাথে ..
প্রণয়ী : আচ্ছা ...
সূর্য : ভয় পাচ্ছিস নাকি ? বস এইখানে !
প্রণয়ী : ....
সূর্য : কিরে ? চুপ কেন ? এই নে চা খা ..
প্রণয়ী : চা মজা না ...
সূর্য : আমি বানাই নাই কিন্তু !
প্রণয়ী : ভাইয়া বিল টা কোন জায়গায় দিবো ?!
সূর্য : আজকে আমি দিচ্ছি , একদিন তালাইমারী যাবো চা খাইতে ঐদিন তুই বিল দিস , আজকে যা , আমার একটা ক্লাস শেষ হয়ে গেলো চা খেতে গিয়ে ! আমিও ক্লাসে যাই !
প্রণয়ী : আচ্ছা ভাই ...

সূর্যের প্রতি প্রণয়ীর মায়া , মুগ্ধতা কখন এসে পরেছে টা প্রণয়ী নিজেও জানে না , তবে বিকেল বেলা যখন সূর্যর সাথে চা খাওয়ার সুযোগ পেতো তখন মুগ্ধতা দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পেতো !

সূর্য : পিচ্চি ফ্রি আছিস ?
প্রণয়ী : জ্বী !
সূর্য : ক্যাম্পাসে আসবি ?
প্রণয়ী : কোনো দরকার ছিল ?
সূর্য : চা খাইতাম , শোন তালাইমারী মোড়ে আয় !
প্রণয়ী : আচ্ছা , পাঁচ মিনিটে
আসতেছি ....
সূর্য : আচ্ছা ...
কিছুক্ষন পর ...
প্রণয়ী : কোথায় আপনি ?
সূর্য : তোর সামনে !
প্রণয়ী : ওহ ! আস্সালামুআলাইকুম ...
সূর্য : ওয়ালাইকুম সালাম ...চায়ের দোকান বন্ধ !
প্রণয়ী : এখন !
সূর্য : চল সি এন্ড বি মোড়ে যাই , যাবি ?
প্রণয়ী : আমার সমস্যা নাই ...
সূর্য : রিকশা নাকি অটো ?
প্রণয়ী : যেইটা আপনার ইচ্ছা !
সূর্য : অটোতে যাই , রিকশাতে তুই লজ্জা পাবি !
প্রণয়ী : দাঁড়ান , আমি রিকশা ঠিক করি , আপনার মতন লজ্জা পাই না আমি !
সূর্য : এই !!
প্রণয়ী : উঠেন রিকশাতে !
সূর্য : আচ্ছা ...

ঐদিনের বিকালের চা আর গাছের ছায়া দিয়ে ঘেরা রাস্তাতে হাঁটা প্রণয়ীর জীবনের অন্যতম সুন্দর মুহূর্ত ! এই মুহূর্ত আর আসবে না , সূর্য প্রণয়ীর না , সূর্য ক্যাম্পাস থেকে গেলে প্রণয়ীকে ভুলে যাবে প্রণয়ী তা খুব ভালো করে জানে !
প্রণয়ীর জীবনের না পাওয়া এক চাহিদা হলো সূর্য !

সূর্যের দেওয়া কোনো নাম ছিলোনা এই গল্পের ;
অথচ তাকে না জানিয়েই প্রণয়ী এর নাম রেখে দিলো " বিচ্ছেদ" !!

ধন্যবাদ সবাইকে আমার লেখা " সূর্যের অবাধ স্নিগ্ধতার প্রলোভন ! ( শেষ পর্ব ) " পড়ার
জন্য , আশা করি আগামীতে আরো ভালো কিছু লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারবো , আজকের মতন বিদায় নিচ্ছি , সবাই ভালো থাকবেন এই আশা করছি ..



0
0
0.000
0 comments