পশুরা পোশাক দেখে শিকার করেনা !!!!

avatar
(Edited)

আজ আমি একটি মেয়ের জীবন কাহিনী বলব। মেয়েটি কিন্তু আমি ই। আমি যেহেতু মেয়ে তাই অবশ্যই আমাকে যৌনহয়রানির শিকার হতে হবে। আমি একটি সামাজিক পরীক্ষা করেছি। আমি বিভিন্ন রকমের জামা পরে রাস্তায় বের হয়েছি, এবং দেখেছি মানুষের দৃষ্টি এবং ভঙ্গি আমার প্রতি কেমন। এই পরীক্ষাটা আমি অনেক আগে থেকেই করছি। অর্থাৎ আমি আগে হিজাব পড়তাম না। তখন থেকেই এই পরীক্ষাটা আমি করেছি।

IMG-20210717-WA0000.jpg

আমি যখন হিজাব পড়তাম না, তখন আমি দেখা যেত কমফোর্টেবল কাপড় পরে বাহিরে যেতাম। তা গেঞ্জি, টি শার্ট কিংবা বড় শার্ট ই হোক বা কেন। আমি ছোটবেলা থেকেই একটু টমবয় প্রকৃতির। রাস্তায় যে যা বলুক কানে নিতাম না। কিন্তু একদিন আমি যথারীতি একটা ঢোলা পোলো শার্ট আর ট্রাউসের পরে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিলাম। সাধারণত আমি বাসে যাতায়াত করতাম। বাসে উঠে আমি কোনো সিট পেলাম না তাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি আমার গন্তব্যে যেতে লাগলাম। আমার মনে হচ্ছিলো কোনো বদ লোক আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হয় মেয়েরা এটা বুঝতে পারে। কিছুক্ষন পর আমি অনুভব করলাম কেউ আমাকে অনেক বাজে ভাবে স্পর্শ করছে। আমি কোনো প্রতিবাদ করার আগেই লোকটা বাস থেকে নেমে গেলো।

একদিন আমি ফুল হাতার একটা থ্রি পিস পরে আমার প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম বাস থেকে নেমে। আমি শুধু হেটে যাচ্ছিলাম কোনোদিকে না তাকিয়ে। হঠাৎ পাশ থেকে অনেকে কুমন্তব্য করা শুরু করলো। আমার তখন মনে হলো হয়তোবা ত্রিপিসটা বেশি টাইট। আমার জামাটা কিন্তু মোটেও টাইট ছিলো না।

আমি হিজাব পড়া শুরু করলাম। সমাজের এই প্রতিবন্ধকতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নয় আমি একজন মুসলিম নারী বলে। যাই হোক আমার সামাজিক পরীক্ষা কিন্তু এখনো চলছে। আমি হিজাবের সাথে একদিন একটা ট্রাউসের এর সাথে ওভার সাইজড গেঞ্জি পরে বের হয়েছিলাম। যথারীতি সেই একই ঘটনা ঘটলো। তখন আমার মনে হলো আমি গেঞ্জি পরা দেখে মনে হয় এবার আমি যৌনহয়রানির শিকার হচ্ছি।

এরপর একদিন আমি একটা ওভার সাইজড গোল এবং লং একটা জামা পরে রাস্তায় বের হলাম সাথে কিন্তু হিজাব ছিল। আমি জামা পরার আগে কিন্তু এটা শিওর হয়েছিলাম আমার দেহের গঠন যেন কেউ না বুঝতে পারে। বলতে গেলে আমার জামাটা সম্পূর্ণ বোরখা কিংবা আবায়ার মতোই ছিলো। সাথে মাস্ক পড়েছিলাম। যাতে কেউ আমার চেহারা না বুঝতে পারে। বিশ্বাস করেন এবার আমি অনেক খারাপ ভাবে যৌন হয়রাইন শিকার হয়েছি। এরপর আমি বুঝতে পেরেছি পশুরা পোশাক দেখে শিকার করেনা ।

যৌন হয়রানি বিভিন্ন সামাজিক অংশে হতে পারে যেমন কর্মক্ষেত্রে, বাড়িতে, স্কুলে,পরিবারে। যৌন হয়রানকারি অথবা ভুক্তভোগী যে কোনও লিঙ্গ হতে পারে। যৌন হয়রানি হলো এক ধরনের লিঙ্গ বৈষম্য (যেখানে প্রযোজ্য) স্থানীয় আইনের অধীনে বেআইনি।যৌন হয়রানির মধ্যে লিঙ্গ, যৌন অভিযোজন, স্ব-সনাক্তকৃত বা অনুভূত লিঙ্গ, লিঙ্গ অভিব্যক্তি, লিঙ্গ পরিচয় এবং লিঙ্গান্তরিত অবস্থার ভিত্তিতে হওয়া হয়রানি অন্তর্ভুক্ত। যৌন হয়রানির ফলে অনেক মানুষ মৃত্যু বেছে নেয়। অনেকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে। এই সমস্যার সমাধান হওয়া আবশ্যক। সমাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যৌন হয়রানির হার কমাতে হবে। তা না হলে সমাজ বিপর্যয়ের মুখে নিমিষেই চলে যাবে।



0
0
0.000
0 comments