ভাঙা হৃদয়

avatar

IMG_20210926_154342.jpg

তিনি অনেক দয়ালু, সংবেদনশীল এবং কমনীয় মেয়ে। সে তার নিজের পরিবারকে অনেক ভালোবাসে। তার পিতা মাতা তাকে সবসময় আদর এবং ভালোবাসায় ঘিরে রাখে। সে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক হন। পড়াশোনা শেষ করে, তিনি একজন প্রভাষক হিসেবে কাজে যুক্ত হন । সবাই তাকে এই কাজে অনেক সাহায্য করেন, কারণ তার সাহায্য করার প্রবণতা খুব বেশি ছিল।

তিনি এডভ্যাঞ্চার প্রেমিক মানুষ ছিলেন এবং তার জীবনে অনেক উচ্চ আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তিনি কাজের মাঝে পিএইচডি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার এর মধ্যেই বিয়ে ঠিক হয়ে যায় এবং 26 বছরে তার বিয়ে হয়। তার বিয়ের সময় খুব আয়োজন হয় , ঠিক তার বাবার ইচ্ছা মত। একটি ছোট শহরে তার বিয়ের অনুষ্ঠিত হয়। ১০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে তার বিয়ের দিন ঠিক হয়।

তার বাবা যখন তার হাত ধরে করিডোরের দিকে হাঁটছিলেন, রেড কার্পেটে হাঁটতে হাঁটতে সবার চোখ শুধু তার দিকেই স্থির হয়েছিল। কারণ সুন্দর সাদা গাউনে তাকে রাজকুমারীর মত সুন্দর দেখাচ্ছিল । তার বিয়ে সকল বন্ধু এবং আত্মীয়দের সাথে দুর্দান্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তার হাসবেন্ড একজন আইটি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী ছিলেন। তার হাজবেন্ড পরিবারের একমাত্র পুত্র , যাকে পরিবারের সবাই অনেক ভালোবাসতো।

সে একজন ভালো মানুষ এবং পুরুষ অহংকারী ব্যক্তি ছিল। সে সকল মানুষকে তাদের অর্থ এবং খ্যাতির ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতেন। বিয়ের পর তিনি তার হাজবেন্ডের শহরেই স্থানান্তরিত হয়। বিয়ের শুরুতে সবকিছু ঠিকঠাক এবং ভালোভাবে চলছিল। প্রায় একবছর পরেই তার গর্ভধারণের কথা শোনা যায় এবং তারপর সে একটি ফুটফুটে কন্যা কে জন্ম দেয়। তার পরিবারের সকল সদস্য সেই দিন খুশির উৎসব পালন করে।

দিন যায় এবং তার হাজবেন্ডের পরিবারের সকল সদস্যদের স্বভাব পরিবর্তন হতে থাকে। তার হাজবেন্ডের বাবা-মা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করে। এক সময় তারা তাকে মারধর করে এবং অপব্যবহার করে। কিন্তু সে তার ছোট মেয়ের জন্য সব অন্যায় সহ্য করে। কারণ সে চায় না , তার ছোট মেয়েটি বাবা থেকে আলাদা হয়ে যাক।

তার হাজবেন্ডের মা তাকে বলে, সে তার ছেলের জন্য সক্ষম নয়। এই কথা শুনে তার হৃদয় ভেঙ্গে যায় এবং সে সেইদিন ভয়ংকর ভাবে কাঁদে। তার হাজবেন্ড সব সময় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং বাসায় ফিরে এসে রাতে ফুটবল ম্যাচ দেখে । তার দিকে কখনো ফিরে তাকায় না । তিনি সেই বাড়িতে একা অনুভব করতেন । সে তার হাজবেন্ডকে এ ব্যাপারে সবকিছু জানায় , কিন্তু তার হাজবেন্ড বলে সবকিছু মানিয়ে নিতে এবং এভাবেই বাঁচতে শিখে নিতে।

কিছুদিন পরে তিনি তার বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন। তিনি তার মন তৈরি করে এবং নিজের সন্তানের জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে। তার বাবা মা তাকে লেখক হতে সাহায্য করে এবং উৎসাহ দেয়। সে অবশেষে লেখক হয় । একসময় তিনি তার সন্তানের সকল চাহিদা পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় যে , তিনি তার হাজবেন্ডের বাড়িতে আর ফিরে যাবে না।

তিনি প্রতিনিয়ত ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন একমাত্র ঈশ্বরী রয়েছে যে তার ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে। তিনি নৈতিক মূল্যবোধ এবং আচার-আচরণে নিজের সন্তানকে একটি সুন্দর জীবন দিতে চায় এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে ভবিষ্যতে তার সন্তান তার যত্ন নিবে।



0
0
0.000
0 comments