ভার্চুয়াল জীবন
আমি সব সময় এটা বিশ্বাস করি ভার্চুয়াল জীবন এবং ব্যবহারিক জীবনকে ভিন্ন রাখা প্রয়োজন। এটার পার্থক্য সব সময় যে দৃশ্যমান হয় এটা সত্যি নয়। কিন্তু দৃশ্যমান না হয় তাহলেই আমাদের জন্য ভাল। যদিও এই বিবৃতিটি এখনো আমার কাছের মানুষ এবং জনগণের জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু এটা আমার জন্য প্রযোজ্য কারণ আমি এটাই বিশ্বাস করি। আমি সব সময় এই দুইটা স্তরকে আলাদা রাখতেই পছন্দ করেছি। আমি যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঠিক সেরকম হওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ সবসময় আমার কাছে ভার্চুয়াল দুনিয়াটাকে জাল বলে মনে হয়েছে।
আমি সবসময়ই প্রতিটি স্তর ভিন্ন দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। আমি যখনই ভার্চুয়াল দুনিয়াতে পদক্ষেপ গ্রহণ করি তখন সেটা অনেকের কাছেই বাস্তব হতে পারে। কিন্তু আমি অন্যদের কাছ থেকে যে চাপ সংগ্রহ করি, সেটা বিশ্বাসের প্রতি একটি শক্তিশালী জাল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে আমার কাছে। আমার কাছে সোশ্যাল মিডিয়া হলো প্রথম স্থান যেখান থেকে এই জাল দৃষ্টিকোণ এর সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন লোকেরা সামাজিক জীবন এবং খ্যাতির প্রতি এতটাই অনুরাগী যে তারা কিছু অতিরিক্ত নাগাল পেতে নিজেদেরকে নকল হিসেবে প্রদর্শন করে।
তারা আসল নকল কে এমন ভাবে মিশিয়ে ফেলে, যখন কারো বিশ্বাস ভেঙে যায় তারা সেটা আর জোড়া লাগাতে পারে না। আসুন আমরা ইতিহাস ভুলে যাই, কারণ প্রত্যেকে আমরা এই সম্পর্কে অবগত রয়েছি। কারণ আমরা সবাই জানি ইতিমধ্যে সেটা কিভাবে কাজ করে এবং মানুষ কিভাবে নিজেদেরকে নকল হিসেবে প্রদর্শন করে। সেই জানা থেকেই আমি সর্বদা এটাকে পৃথক রাখার চেষ্টা করেছি। ইতিমধ্যে সেটাকে আমি সব সময় আলাদা রেখে নিজেকে অভ্যাসে তৈরি করেছি। আমার মধ্যে একটা বিদ্রুপাত্মক ব্যাপার রয়েছে, হয়তো বেশিরভাগ আমরা মেয়েরা এটা উপলব্ধি করতে পারি।
কিন্তু ছেলেদের সম্পর্কে সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে পারি না। আমার যে ভার্চুয়াল বন্ধু গুলো রয়েছে তাদের সাথে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আমার বেশ কম যোগাযোগ রয়েছে। আমার মধ্যে কি এর প্রতি আগ্রহ কম, নাকি আমি এই ব্যাপারে অলস সেটা আমি ঠিক জানিনা। আমি সব সময় বন্ধুদের সাথে সরাসরি দেখা করাটা বেশি পছন্দ করতাম। আমার যখন বাস্তব জীবনের কোন সমাধান প্রয়োজন হতো আমি শুধুমাত্র তাদেরকে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ করতাম। কিন্তু এখনকার দিনে ভার্চুয়াল এবং ব্যবহারিক জীবনে এটা আমাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে। অনেকেই রয়েছে যারা নিজেদেরকে বিচার করতে পছন্দ করে না । এমনকি তাদের উপর কেউ দৃষ্টিভঙ্গি রাখুক সেটা তারা চায় না।
আমরা কখনোই নিজের মূল্যবান সময়কে ভার্চুয়াল দুনিয়াতে নষ্ট হতে দিতে চাইনা। কিন্তু কিছু কিছু লোক রয়েছে যারা শুধুমাত্র নিজের মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য ভার্চুয়াল দুনিয়াতে নিজেদের ছাপ রাখে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন মনে হয় যে তাদের এটা অধিকার রয়েছে। তারা চাইলেই সবাইকে নিজের হিসাবে বিচার করতে পারে। আমি জানি ভার্চুয়াল দুনিয়া পুরোটাই নকল। কারণ আপনি যখন নিজের ক্যামেরায় একটি সেলফি তুলতে চান সেখানে আপনি কালো থেকে ফর্সা হয়ে উঠতে পারেন সহজেই, শুধুমাত্র একটি ফাংশন আপনাকে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয় আপনি ছোট থেকে বড় যে কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারবেন নিজের একটি ছবিতে। আর মানুষ এই সুযোগ গ্রহণ করেই নিজের একটি নকল দুনিয়া তৈরি করে।
এখন বিভিন্ন নাটক তৈরি হচ্ছে এই ভার্চুয়াল দুনিয়া নিয়ে ।যেখানে দেখা যাচ্ছে, যেই মানুষটার সাথে ভার্চুয়াল দুনিয়াতে তার ছবি দেখে কথা বলছে, সেই মানুষটাকে সামনে দেখে তারা চিনতে পারছে না। এটা হাস্যকর না হলেও এটা আমাদের জীবনের বাস্তব চিত্র। তাই চেষ্টা করবেন নিজের নকল দুনিয়াটাকে নিজের আসল দুনিয়ার সাথে পরিচয় না করাতে। যতটা সম্ভব এই ভার্চুয়াল দুনিয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
500 HP | 1000 HP | 2000 HP | 5000 HP | 10000 HP | 15000 HP | 20000 HP |